নওগাঁয় নাহিদ হোসেন নামের এক কিশোর বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে মৃত্যুর প্রায় ২৫ দিন পর নওগাঁ আদালতে নিহতের বাবা মো: জবির উদ্দিন মন্ডল(৫০) বাদি হয়ে ১. মো: এনামুল হোসেন(৪৫) পিতা:- মো: আফাজ উদ্দিন ২. মোছা: মাজেদা বেগম(৩৫) স্বামী:- মো: এনামুল হোসেন, ৩. মোছা: আমেনা খাতুন(২০) পিতা:- মো: এনামুল হোসেন, ৪. মো: জুনায়েদ হোসেন ( ১৪) পিতা:- মো: এনামুল হোসেন, ৫. মো: মাজেদুল ইসলাম (৪০) পিতা:- মো: মজির উদ্দিন, ৬. মোছা: সুফিনা বেগম(৪৫) স্বামী :- মো: সালাম, সর্ব সাং ফতেপুর পোস্ট: ফতেপুর, থানা:- মহাদেবপুর, জেলা:- নওগাঁ এর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দায়েরকৃত ওই মামলায় উল্লেখ করা হয় গত ২৭/৯/২০২৩ তারিখে বাদীরা স্ব পরিবারে নওগাঁ থাকার কারনে নিহত নাহিদকে ১নং বিবাদী ‘ঈদমিলাদুন্নবী’ উপলক্ষে জিকির ও আজগর মিলাদ করার উদ্দেশ্যে মাইক টাঙানোর জন্য গাছে উঠিয়ে দেন। মাইক বাঁধানো না হতেই বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে, তার কনিষ্ঠ ছেলের মৃত্যু দূর্ঘটনা নয় বরং আসামীগন পরস্পর যোগসাজশে এবং পরিকল্পিত ভাবে তাকে হত্যা করেন এমনটাই দাবী করেন নিহতের বাবা জবির উদ্দিন।
এবিষয়ে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, ওই দিন নিহত নাহিদ হোসেন তার নিজ ঘরেই বিদ্যুৎপৃষ্ট হলে বিবাদী এনামুল হক এবং জুনায়েদ হোসেন প্রথমে দেখতে পান এবং উদ্ধারের চেষ্টা করেন। পরক্ষণে তাকে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে তার মৃত্যু হয়।
এব্যাপারে বিবাদী এনামুল হোসেন জানান, নিহত নাহিদ হোসেন আমার প্রতিবেশি, ছোটবেলা থেকেই ইলেকট্রনিকস পন্য তৈরিতে তার ব্যপক উৎসাহ ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় নিজ ঘরে বসেই বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সামগ্রী মেরামত ও তৈরি করে। ঘটনার দিন তার নিজ ঘরে অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎপৃষ্ট হলে আমি তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করি। এ সময় স্থানীয় অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। আমার ১০ বছর বয়সের শিশু সন্তান জুনায়েদকেও আসামি করা হয়েছে যা পুরোপুরি মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত।
ইউপি সদস্য শাহীনুর রহমান বলেন, ঘটনার দিন নিহতের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাাকায় লাশ দাফন করা হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে নিহতের ঘটনা আমাকে অবগত করা হলে আমি নিহতের বাবাকে আইনি সহায়তা নেওয়ার জন্য বললে তিনি উক্ত বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিতে অনাগ্রহ এবং তার ছেলের মৃত্যুর ব্যাপারে কারো প্রতি কোন অভিযোগ নেই বলে জানান। পরবর্তীতে মহাদেব পুর থানার ওসি মহোদয়ের সাথে কথা বলার পর নিহতের দাফন সম্পন্ন হয়।
এবিষয়ে জবির উদ্দিন মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার ছেলের মৃত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। বিবাদীগনরা পরিকল্পিত ভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই। স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে গ্রাম্য শালীসের মাধ্যমে বিষয়টি নিরসন এবং ঘটনার বেশ কিছুদিন পর আদালতে মামলা করার ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, আমাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তি ভুল বুঝিয়ে আমার সময় ক্ষেপন করেছে, গ্রাম্য শালিসে বিষয়টি নিরসন হয়নি বরং বিবাদীগনরা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য উপযাচক হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মোজাফফর হোসেন বলেন, ঘটনর দিন থানায় কেউ কোন অভিযোগ করেনি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান যোগাযোগ করেছিলেন তবে কেউ বাদী না হওয়ায় পারিবারিক ভাবে লাশ দাফন করা হয়।